মিলের (Mill) ব্যতিরেকী পদ্ধতি (Method of Disagreement) আলোচনা করো।

Method of Disagreement

Table of Contents

মিলের (Mill) ব্যতিরেকী পদ্ধতি 

যুক্তিবিজ্ঞানী মিল (John Stuart Mill) তাঁর A System of Logic’ গ্রন্থে এই বিশ্বের জটিল প্রাকৃতিক ঘটনাগুলির মধ্যে কার্য-কারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করার জন্য যে পাঁচটি পরীক্ষণমূলক পদ্ধতির কথা বলেছেন তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ শ্রেষ্ঠ একটি মুখ্য পদ্ধতি হলো অপসারণের দ্বিতীয় সূত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত ব্যতিরেকী পদ্ধতি।

সংজ্ঞা

মিল (J S Mill) তাঁর A System of Logic’ গ্রন্থে ব্যতিরেকী পদ্ধতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন- “আলোচ্য ঘটনাটি যদি একটি মাত্র দৃষ্টান্তে উপস্থিত থাকে এবং অন্য একটি দৃষ্টান্তে অনুপস্থিত থাকে এমন দুটি দৃষ্টান্তের মধ্যে যদি একটি বিষয় ছাড়া সবকটি বিষয়ে মিল থাকে, তাহলে যে ঘটনাটি প্রথম দৃষ্টান্তে উপস্থিত থাকে এবং দ্বিতীয় দৃষ্টান্তে অনুপস্থিত থাকে, সেটাই হবে আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ।”

আকার   

 1. কার্য থেকে কারণ

পূর্ববর্তী ঘটনা (কারণ)

অনুবর্তী ঘটনা (কার্য)

ABCDE

abcde

BCDE

bcde

‘A’ হল ‘a’-এর কারণ।

2. কারণ থেকে কার্য

পূর্ববর্তী ঘটনা (কারণ)

অনুবর্তী ঘটনা (কার্য)
ABCD

abcd

BCD

bcd

‘a’ হল ‘A’-এর কার্য।

দৃষ্টান্ত

গুলিবিদ্ধ হওয়াই লোকটির মৃত্যুর কারণ।

পূর্ববর্তী ঘটনা (কারণ)

অনুবর্তী ঘটনা (কার্য)

লোকটি গুলিবিদ্ধ হয়নি।

লোকটির মৃত্যু হয়নি।

লোকটি গুলিবিদ্ধ হলো।

লোকটির মৃত্যু হলো।

গুলিবিদ্ধ হওয়ায় লোকটির মৃত্যুর কারণ।

উক্ত দৃষ্টান্তে পরীক্ষণের উপর ভিত্তি করে ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে বলে সিদ্ধান্তটি সুনিশ্চিত।

সুবিধা

মিলের ব্যতিরেকী পদ্ধতির দুটি সুবিধা হলো-

  1. ব্যতিরেকী পদ্ধতি মূলত পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি। কাজেই, যে সকল ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ সম্ভব নয়, সেই সকল ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিকে প্রয়োগ করে কার্য-কারণ সম্বন্ধকে নিশ্চিত ভাবে প্রমাণ করা যায়।
  2. কেবলমাত্র সদর্থক ও নঞর্থক দৃষ্টান্তের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে, প্রয়োগের দিক থেকে এই পদ্ধতি খুবই সহজ ও সরল। কাজেই, দৈনন্দিন জীবনে এই পদ্ধতিকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে আমরা সুনিশ্চিত সিদ্ধান্ত পেতে পারি।

অসুবিধা

মিলের ব্যতিরেকী পদ্ধতির দুটি অসুবিধা হলো-

  1. ব্যতিরেকী পদ্ধতির সাহায্যে কারণ থেকে কার্য আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যায়। কিন্তু কার্য থেকে কারণ আবিষ্কার করা যায় না।
  2. ব্যতিরেকী পদ্ধতি বহুকারণবাদের সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণভাবে দূর করতে পারে না। কেননা এই পদ্ধতি কেবল একটি বিশেষ ক্ষেত্রে কারণ নির্ণয় করতে পারে কিন্তু সেই কারণটিই যে সব ক্ষেত্রে কোনো কার্যের একমাত্র কারণ তা প্রমাণ করতে পারে না। তাছাড়া এই পদ্ধতির অসতর্ক প্রয়োগের ফলে কাকতালীয় দোষ ঘটে।

 

The End

 

WhatsApp
Facebook
Telegram
Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *